আদিবাসী পুন‍্যার্থীরা পুন‍্যস্নান করলেন দামোদর নদে : তর্পণ স্বর্গীয় পিতৃপুরুষদের

15th January 2021 3:02 pm বর্ধমান
আদিবাসী পুন‍্যার্থীরা পুন‍্যস্নান করলেন দামোদর নদে : তর্পণ স্বর্গীয় পিতৃপুরুষদের


প্রদীপ চট্টোপাধ‍্যায় ( জামালপুর ) :  এক ঝলক দেখলে মনে হবে এযেন এক অন্য গঙ্গা সাগর ।শুক্রবার হাজার হাজার  আদিবাসী পূণ্যার্থী পূণ্য স্নান সেরে পিতৃ পুরূষের উদ্দেশ্যে তর্পন সারলেন পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে দাদোদরের ’তেলকুপি  গয়া ঘাটে’ । তর্পন সেরে তারা পুজোও  দিলেন তেলকুপি ঘাটের মারাংবুরু মন্দিরে। পৌষের  সংক্রান্তিতে গঙ্গা সাগর যেমন ভরে গিয়েছিল হিন্দু পূণ্যার্থী সমাগমে, ঠিক তেমনই এই দিনটিতেও দামোদরের তেলকুপি ঘাটের বালির চর ঢাকা পড়লো আদিবাসী পূণ্যার্থীদের  ভিড়ে । প্রতিবছর ১ মাঘ  জামালপুরের তেলকুপি গয়া ঘাটে পূণ্য স্নান ও অস্থি বিসর্জন সমারোহে অংশ নেন  রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা  আদিবাসী পূণ্যর্থীরা। শুধু এই রাজ্যের আদিবাসীরাই নয় ,ঝাড়খণ্ড , বিহার ও ওড়িষ্যা রাজ্যের হাজার হাজার পূণ্যার্থীও এদিন  পূণ্য স্নান সারলেন তেলকুপি গয়া ঘাটে । পূণ্য স্নান পর্ব নির্বিঘ্নে সমাপ্ত করতে গঙ্গাসাগরের মতো  এখানেও এদিন মোতায়েন রাখা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী । জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা ছাড়াও পূর্ব বর্ধমান জেলাপরিষদে  সহ-সভাধিপতি দেবু টুডু, জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মেহেমুদ খান, বিডিও শুভঙ্কর মজুমদার  প্রমুখরা এদিন তেলকুপি ঘাটে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে যোগদান করেন ।দেবু টুডু নিজে দামোদরের তেলকুপি ঘাটে পুণ্যস্নান ও তর্পণ সারেন ।তেলকুপি ঘাটের  নিরাপত্তা  ব্যবস্থা সামাল দিতে এদিন হিমশিম খেতে হয় পুলিশ কর্মীদের । দামোদরে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থাও রাখা হয়  ।  দামোদরের চরেই এদিন বসানো হয়েছিল মেডিকেল ক্যাম্প ।
তর্পন উৎসব আয়োজকদের  তরফে  রবীন মাণ্ডি জানান ,“বর্ণ হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজনের কাছে  গঙ্গাই সবথেকে পবিত্র জলাশয় । কিন্তু সুপ্রাচীন কালথেকেই দামোদর নদকেই সবথেকে পবিত্র জলাশয় হিসাবে মান্যতা দিয়ে আসছেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজন।  দামোদরের তেলকুপি গয়া ঘাট এই দেশের আদিবাসী  সম্প্রদায়ের  মানুষজনের কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ পূণ্য তীর্থভূমি  ।বর্ণ হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজন মহালয়ার দিন গঙ্গায়  পিতৃপুরুষের উদ্দ্যেশ্যে তর্পন সারেন । পৌষের সংক্রান্তিতেও গঙ্গাস্নান সারেন বর্ণ হিন্দুরা ।তবে আদিবাসীরা প্রতিবছর  ১ মাঘ দামোদরের তেলকুপি গায়া ঘাটে পূণ্য স্নান সেরে পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে তর্পন সারেন। তর্পন সেরে আদিবাসীরা তাদের আরাধ্য দেবতা “ শিব তথা  মারাং বুরুর” মন্দিরে   পুজো দেন । ”   আদিবাসী সমাজের বিশিষ্ঠ ব্যক্তিবর্গ , কবি , সাহিত্যিক ও শিল্পীরা এদিন পূণ্য তীর্থ তেলকুপি ঘাটে সমবেত হয়েছিলেন। ধর্মীয় উপাচার সেরে আদিবাসী পুরুষ ও মহিলারা এদিন দামোদরে বালির চরে  নাচ গানে মাতোয়ারা হন । বালির চরেই হয়  রান্না করে স্বপরিবার খাওয়া দাওয়া । আদিবাসী তর্পন উৎসব উপলক্ষে  দামোদরের বালির   চরে  এদিন জমজমাট মেলাও বসে।  আয়োজকরা জানিয়েছেন ,রীতি মেনেই সূর্যাস্তের প্রাক্কালেই পূণ্যার্থীরা  দামোদর ছেড়ে যে যার নিজের  বাড়ির উদ্দ্যেশ্যে রওনা দেন   ।


 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।